পেঁয়ারা চাষ
পেঁয়ারার জাতঃ-
স্থানীয় জাতের মধ্যে-স্বরুপকাঠি, কাঞ্চননগর, মুকুন্দপুরী এবং উন্নত জাতের মধ্যে কাজী পেঁয়ারা, বারি পেঁয়ারা -২ অন্যতম।
কাজী পেঁয়ারা:- ফল আকারে বেশ বড়,একটি পেয়ারার ওজন ৪০০-৫০০ গ্রাম হয়।কাজী পেঁয়ারা খেতে সামান্য টক লাগে।
উপযুক্ত জমি নির্বাচনঃ-
সুনিষ্কাসিত উঁচু জমি ও মাঝারি উঁচু জমি পেয়ারা চাষের জন্য উপযোগি।
চারা তৈরিঃ-
গুটি কলমের মাধ্যমে পেঁয়ারার চারা তৈরি করা হয়।
চারা রোপণ ও সার ব্যবস্থাপনঃ-
সমতল ভূমিতে বর্গাকার ও ষড়ভূজী এবং পাহাড়ি ভূমিতে কন্টুর পদ্ধতিতে করা হয়। পেঁয়ারার চারা মধ্য জ্যৈষ্ঠ থেকে মধ্য আশ্বিন মাসে রোপণ করা হয়। রোপণের আগে গর্ত তৈরি করে নিতে হয় এবং প্রতি গর্তে গোবর ২০ কেজি, পচা খৈল ২ কেজি, টিএসপি সার ২০০ গ্রাম, এমওপি সার ২০০ গ্রাম প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভাল ভাবে মিক্স করে ১৫ দিন রেখে দিতে হয়। ১৫ দিন পর চারা রোপন করতে হয় এবল প্রতি চারা থেকে চারার দূরত্ব ৪ মিটার রাখতে হয়।
সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা ও পরিচর্যাঃ-
খরার সময় ২-৩ বার পানি সেচ দিতে হয়। তাছাড়া গাছের গোড়া থেকে আগাছা পরিষ্কার করতে হয় এবং প্রতি মৌসুমে পেঁয়ারা সংগ্রহের পর ভাঙ্গা, রোগাক্রান্ত ও মরা শাখা-প্রশাখা ছাঁটাই করে ফেলতে হয়। তাতে গাছে আবার নতুন নতুন কুঁড়ি জন্মায়। পেঁয়ারা গাছে প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যক ফল দিয়ে থাকে। তাই মার্বেল আকৃতি হলেই কিছু ফল ফেলে দিলে গাছে থাকা বাকি ফল আকারে বড় হয়।
ফসল সংগ্রহঃ-
সবুজ থেকে হলদে সবুজ রঙ ধারণ করলে ফল সংগ্রহ করতে হয়।
পেঁয়ারা গাছের এ্যানথ্রাকনোজ রোগ দমনঃ-
রোগের লক্কন ক্ষতির নমুনা :-পেঁয়ারা গাছের পাতা, কান্ড, শাখা-প্রশাখা ও ফল এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এক ধরণের ছত্রাকের আক্রমনে এমনটি হয়ে থাকে। প্রথমে পেঁয়ারার গায়ে ছোট ছোট বাদামী রঙের দাগ দেখা যায়। দাগগুলো ক্রমান্বয়ে বড় হয়ে পেঁয়ারার গায়ে ক্ষত সৃষ্টি করে। আক্রন্ত ফল অনেক সময় ফেটে যায়। তাছাড়া এ রোগে আক্রান্ত ফলের শাঁস শক্ত হয়ে যায়।
রোগের বিস্তার :- বাতাস ও বৃষ্টির মাধ্যমে রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। গাছের পরিত্যক্ত শাখা প্রশাখা, ফল এবং পাতায় এ রোগের জীবাণু বেঁচে থাকে এবং পরে বিস্তার লাভ করে।
রোগের প্রতিকার:- গাছের নিচে ঝরে পড়া পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হয়। গাছে ফুল ধরার পর টপসিন-এম প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম অথবা টিল্ট ২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মি.লি হারে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ৩-৪ বার ভালভাবে স্প্রে করে এ রোগ দমন করা যায়।